"Hill Science Society" পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজন করতে যাচ্ছে “Angels of Science: ICT Online Quiz Competition Season 1"।

একটি জাতির সবচেয়ে বড় সম্পদ কী? কোথায় নিহিত এর শক্তিমত্তার সবচেয়ে বড় আধার? জাতি কি সামনে এগুবে না পিছিয়ে পড়ে হামাগুড়ি দিতে থাকবে তার নিয়ামকই বা কী? এর প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদ? ভূমির উর্বরতা? অর্থের যোগান? সমর সম্ভার? সন্দেহ নেই, এর সব কটিই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তবে, মনে হয়- এগুলোর চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ এর মানব সম্পদ, একটি দক্ষ, শিক্ষিত ও সুশৃঙ্খল জনগোষ্ঠী, যারা দেশ ও জাতির প্রয়োজনে নিজেদের সর্বস্ব নিংড়ে দিতে সদা প্রস্তুত। একটি জাতির ভবিষ্যৎ উন্নতি ও প্রগতি বহুলাংশে নির্ভর করে এর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, কিশোর, তরুণেরা কীভাবে গড়ে উঠছে তার ওপর।


একটি দূরদর্শী জাতি এ কারণে তাদের তরুণ প্রজন্মকে ভবিষ্যতের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে দক্ষ ও সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করে। আপনি একটু ক্ষুদ্র পরিসরে ভাবুন। একটি হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে-মেয়েরা যখন কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সুশিক্ষিত হয়ে সমাজে আলো ছড়াতে শুরু করে, এক প্রজন্ম আগেও যারা চারিদিকে অর্থ-বিত্তে প্রবল প্রতিপত্তিশীল ছিল, তারা কেমন যেন এদের সামনে ছায়া হয়ে যায়। একইভাবে একটি জাতি যদি তার তরুণ প্রজন্মকে শিক্ষিত ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারে, এক প্রজন্মের ব্যবধানেই আপনি হয়তো একটি যাদুকরী পরিবর্তনের দেখা পেতে পারেন। বিপরীতে, একটি জাতি যখন বিত্ত-বৈভবে বিভোর হয়ে বিলাস-বসনে গা ভাসিয়ে দেয়, এর তরুণ-যুবারা পরিশ্রম-বিমুখ হয়ে পড়ে, শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে পড়ে, তাদের মধ্যে অদক্ষতার পাশাপাশি বিভিন্ন নৈতিক বিচ্যুতিও দেখা দেয়, সমাজে নানাবিধ অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। ফলে, উন্নতি-প্রগতির শিখরে উড্ডয়মান একটি জাতিকে দু-এক প্রজন্মের ব্যবধানেই হয়তো ভূতলে পতিত হতে দেখতে পারেন। এটি স্রেফ তত্ত্বের কচকচানি নয়, পৃথিবীর ইতিহাস এরকম বহু উত্থান-পতনের সাক্ষী।

তরুণরাই একটি জাতির মূল সম্পদ। এদের মধ্যে থাকে তীব্র অনুসন্ধিৎসা ও অদম্য কর্মস্পৃহা, কিছু একটা করার জন্য সদা অস্থিরতা ও আকুলি-বিকুলি। তাদের এই মনোদৈহিক চাহিদাকে আপনি কীভাবে মেটাবেন, তার ওপর নির্ভর করবে তাদের মধ্যে যে প্রতিভা ও কর্মশক্তি নিহিত রয়েছে, তা কোন খাতে প্রবাহিত হবে। শৈশব পেরিয়ে যখন কৈশোরে পৌঁছে, তারুণ্যে পদার্পণ করে, চারিদিকে অনেক কিছুই তাদের হাতছানি দেয়, কাছে টেনে নিতে চায়। পরিবার ও শ্রেণীকক্ষের বাইরেও বিশাল এক জগতের সঙ্গে তাদের নিরন্তর মিথস্ক্রিয়া ঘটে। এখানে তাদের যেমন নিত্য-নতুন অনেক কিছু শেখার সুযোগ হয়, অভিজ্ঞতার অভাবে ও এডভেঞ্চারাস এটিচ্যুডের কারণে যেকোনো মুহূর্তে ভুল পথে পা বাড়ানোর আশংকাও থেকে যায়।
এ অবস্থায় কিশোর-তরুণদের এই মনোদৈহিক চাহিদার যোগানে এবং বিপথগামী হওয়া থেকে সুরক্ষা দানে প্রয়োজন তাদের বিভিন্ন রকম সৃষ্টিশীল ও গঠনমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যাপৃত করা। এতে করে তারা তাদের সমবয়সীদের পাশাপাশি সিনিয়র-জুনিয়রদের সঙ্গে মেশার সুযোগ পায়, সামষ্টিক পরিসরে কাজ করার মধ্য দিয়ে তাদের মধ্যে ভবিষ্যতে কাজ করার উপযোগী দক্ষতা ও নেতৃত্ব গুণের বিকাশ ঘটে এবং সর্বোপরি সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা কমে যায়। পাড়া-মহল্লায় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন কিশোর-তরুণদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে ব্যাপৃত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। মানব সভ্যতা আজ যে পর্যায়ে উপনীত হয়েছে, তাতে মূল ভূমিকা রেখেছে বিগত কয়েক শতকে বিজ্ঞানের বিস্ময়কর সব আবিষ্কার। বিজ্ঞানের কল্যাণে কৃষি ও শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। শত-সহস্র বছর ধরে মানুষ যে সব রোগ-ব্যাধির কাছে অসহায় ছিল, তার অনেকগুলোই আজ মানুষের নিয়ন্ত্রণে। মানুষের বিচরণ আজ কেবল ভূপৃষ্ঠে সীমাবদ্ধ নয়। সমুদ্রের তলদেশ কিংবা মহাবিশ্বের অসীম শূন্যতা সবখানেই মানুষ চষে বেড়াচ্ছে। তবে, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এ মহাবিস্ফোরণে আমাদের মতো বহু জাতি নিতান্তই দর্শক মাত্র। আমরা চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকি, ওরা কখন কী আবিষ্কার করবে আর আমরা তার এঁটো-জুটো কিছু পাব। বিজ্ঞানের এ যুগে একটি জাতি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এগিয়ে যেতে না পারলে তার ভাগ্যাকাশে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা সুদূর পরাহত। যে প্রশ্নটি অনেকের মনে আসবে, জাতি হিসেবে কি আমাদের সামর্থ্যে ঘাটতি রয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায়

প্রথমবারের মতো "Hill Science Society" পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজন করতে যাচ্ছে “Angels of Science: ICT Online Quiz Competition Season 1"। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রতিযোগিরা নিজেদের ICT বিষয়ক জ্ঞান ঝালাই করে নিতে পারবে, সেই সাথে সাইবার স্পেসে কীভাবে নিরাপদ থাকা যায় সে সকল কলাকৌশল শিখতে পারবে।


প্রথম তিনজনের জন্য থাকছে বিশেষ পুরষ্কার, সার্টিফিকেট ও সকল অংশগ্রহণকারীদের জন্য থাকবে সার্টিফিকেট।
কারা অংশ নিতে পারবে?
১. নবম-দশম ও
২. একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর সকল জুম্ম শিক্ষার্থী
রেজিস্ট্রেশনের লিঙ্ক: https://forms.gle/NtHxTN9itp9fXrXw8

রেজিস্ট্রেশনের সময়সীমা: ১০.০৩.২০২২ইং এবং প্রতিযোগিতার তারিখ: ১১.০৩.২০২০ ইং।
১২.০৩.২০২২ ইং তারিখে সকল প্রতিযোগিদের নিয়ে সাইবার স্পেসে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা, নিজের অর্জিত জ্ঞান ধারা কীভাবে আশেপাশের মানুষেদেরকে সাইবার নিরাপত্তায় উদ্বুদ্ধ করা যায় ইত্যাদি বিষয়ে অনলাইন সেশন।


Follow On

Facebook || LinkedIn

Comments